প্রায় ৮৭১৯১টি গ্রাম নিয়ে আমাদের এই বাংলাদেশ। এতো হাজার হাজার গ্রামের মধ্যে ‘গোলাপ গ্রাম’ নামে কোনো গ্রামের নাম কি শুনেছেন? হ্যাঁ, খোদ রাজধানীর অদূরে সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নে দেখা মিলবে গোলাপ গ্রামের। একটি কিম্বা দুটি নয় হাজার হাজার---এমনকি লক্ষও ছাড়িয়ে যেতে পারে(যদি গোনা হয়) এই গ্রামে গোলাপের সংখ্যা। শুধু লাল,হলুদ, সাদা নয়; কালো গোলাপ হতে শুরু করে ৭ রঙের মিশেল গোলাপও এখানে পাওয়া যায়। গ্রামের প্রতিটি বাড়ীর আঙিনায় রয়েছে গোলাপের ক্ষেত এবং তাতে ফুটে রয়েছে হরেক রঙের গোলাপ। তবে লাল এবং গোলাপী রঙের গোলাপের পরিমাণ বেশী। সোজা কথায়, এ দেশের বিভিন্ন এলাকায় যেমন ধান/সরিষার আবাদ হয় তেমনি সাভারের এই গ্রামে গোলাপের আবাদ হয়। দূরদূরান্ত থেকে পর্যটকরা এই গ্রাম দেখতে আসে। আর সেই সাথে বিভিন্ন জায়গা থেকে ফুলের আড়ৎদাররা আসে গোলাপ কিনে নিতে। তবে শীতকালে এ এলাকায় ব্যবসাবাণিজ্য বেশী হয়। কেননা শীতকালে বিয়ে/হলুদ/পিকনিক ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সারা বছরের তুলনায় বেশী হয়, তাই তখন চাহিদা বেশী। এখানের গোলাপ চাষি ইদ্রিস মোল্লা বলেন,”শীতে গাছে পানির প্রয়োজন কম হয় তাই অল্প পানিতেই অধিক পরিমাণ ফুল পাওয়া যায়। এছাড়া শীতের কুয়াশা ও ঠান্ডায় ফুল দীর্ঘ সময় সতেজ থাকে; যা পর্যটকদের এবং ফুলের আড়ৎদারদের আকৃষ্ট করে।“ অপর এক চাষি হাশেম মিয়াঁ জানান,” তার ৩৩ শতক জমি রয়েছে এই গ্রামে; তিনি প্রায় ২৫ শতকে তাঁর দুই মেয়েকে নিয়ে গোলাপের চাষ করেন। শীতকালে গোলাপ বেচা কিনি চলে রাত অবধি। উপরন্তু গোলাপ ক্ষেতে সবাই আসে মোবাইলে সেলফি কিম্বা ক্যামেরায় ছবি তুলতে। অনেক ব্লগার/ইউটিউবারকে ও এখানে দেখা যায়।“ তবে সন্ধ্যার পর পর্যটকদের ঘুরে বেড়ানো সংরক্ষিত আছে। এখানে নিয়ম হলো ক্ষেতের ভিতর ঢুকতে হলে আপনাকে কিছু গোলাপ কিনে নিতে হবে অথবা ৫০টাকা(এন্ট্রি ফি) দিতে হবে এবং আপনি ইচ্ছামতো ছবি তুলতে পারবেন। কিন্তু ইদানীং লেকআইল্যান্ড নামে এক ভূমিদস্যু গ্রুপ গোলাপ গ্রামকে টার্গেট করে সেখান থেকে মাটি তুলে নিচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয় গোলাপ চাষিদের।
কিভাবে যাবেনঃ
একদম সরলপথ। ঢাকার সাভারের বিরুলিয়া ব্রীজ পার হয়ে আকরান বাজার যাবেন। তারপর সোজা ২ কিমি গেলেই দেখবেন গোলাপ গ্রাম; আর ঐখানে গাড়ী পার্কিং এবং বিশ্রামের ও সুব্যবস্থা আছে। আর হ্যাঁ, অবশ্যই মোবাইলের মেমোরী স্টোরেজ খালী করে যাবেন, কেননা ২-৪ টা নয় ওখানে গেলে শতশত ছবি তুলতে ইচ্ছা করবে! আপনাদের যাতায়াত সুবিধার জন্য গুগল ম্যাপ ব্যবহার করতে পারেন।